Sunday, March 29, 2015

আল কোরআনের আলোকে তাবলিগ ও দাওয়াহ

আল কোরআনের আলোকে তাবলিগ

 ও দাওয়াহ

এ.জেড.এম. শামসুল আলম : আমরা জন্মগত মুসলিমগণ প্রতিদিন আল্লাহ তায়ালার বহু হুকুম পালন করি। আমাদের প্রতি মহা স্রষ্টার সর্বপ্রথম হুকুম এবং আমল হলো, ঈমান বা বিশ্বাস সংক্রান্ত। ঈমান আনয়নের পর আমাদের প্রথম কাজ হলো, ঈমানের দাওয়াত দেওয়া। সালাত, সিয়াম, যাকাত, হজ এবং আরো শত শত আমল আছে। সালাতের বা নামাজের বিষয়টি আল কোরআনে এসেছে ৬৭ বার এবং সিয়াম শব্দটি আল কোরআনে এসেছে ১২ বার। ঈমান শব্দটি আল কোরআনের এসেছে ৪৫ বার। হজ শব্দটি আল কোরআনে এসেছে ১০ বার।
ঈমান আনয়নের পর আমাদের ঈমান সম্পর্কীয় কাজটি শেষ হয়ে যায় না। সালাত, সিয়ামে বিশ্বাস করলেই সালাত, সিয়ামের কাজ আদায় হয়ে যায় না। আমল থেকে যায়। অনুরূপভাবে, ঈমান আনয়নের পরেই ঈমানের কাজ শুরু হয়। যারা ঈমান আনেনি, তাদেরকে ঈমানের দাওয়াত দেয়া হলো ঈমান সংক্রান্ত আমল। বাংলাদেশী তথা বর্তমান বিশ্বের সমগ্র মুসলিম উম্মার দ্বিনী কাজসমূহের মধ্যে ঈমান, নামাজ, রোজা, হজ, যাকাত ইত্যাদি এর পর আমার বিবেচনায় সর্বোত্তম আমল হলো তাবলিগ। সর্বোত্তম সম্মেলন হলো ঢাকা মহানগরীর অদূরে টঙ্গিতে অনুষ্ঠিত তাবলিগী ইজতেমা বা বিশ্ব মহা সম্মেলন। আল কোরআন কি শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য নাজিল হয়েছে? না, অবশ্যই নয়। আল কোরআনে মুসলিম সংক্রান্ত শব্দগুলো এসেছে ১৮ বার এবং কাফির সংক্রান্ত শব্দগুলো এসেছে বহুগুণ বেশি সর্বমোট ১৩২ বার।


কাফির :    

আল কোরআনে কাফির শব্দটি এসেছে ৫ বার। বহুবচনে কাফিরুন শব্দটি এসেছে ৩৬ বার। কাফির শব্দের আরেকটি বহুবচনে কাফিরীন শব্দটি এসেছে ৯১ বার। কাফির সংক্রান্ত শব্দ কোরআনে এসেছে সর্বমোট ১৩২ বার। এতে কি বুঝা যায় না যে, আল কোরআন শুধুমাত্র মুসলিম সংক্রান্ত কিতাব নয়। এটি অবশ্যই কাফির সংক্রান্ত কিতাবও বটে। কারণ, কাফিরগণও হজরত আদম (আ.)-এর আওলাদ।
জন্মের পূর্বে কেউ কাফির পিতা-মাতার পরিবারে কাফির হয়ে জন্মের জন্য দরখাস্ত করেনি। তাদের কাফির হিসেবে জন্মগ্রহণ করা পরম ¯্রষ্টা আল্লাহ তায়ালার সিদ্ধান্ত। কাফির না থাকলে বা চিহ্নিত করতে না পারলে ঈমানদার চিহ্নিত করা যায় না।

আল কোরআন কার জন্য : 

আল কোরআন কি শুধু মুসলিমদের জন্যই নাজিল হয়েছে? এটা কি শুধু আল্লাহর শ্রেষ্ঠ নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসারীদের জন্য? এটা কি হজরত ঈসা (আ.), নুহ (আ.), ইব্রাহিম (আ.) এবং মুসা (আ.)-এর অনুসারীদের আওলাদের শিক্ষার জন্যে কিতাব নয়?
আল কোরআন যদি শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য নাজিলকৃত কিতাব হতো, তাহলে এই কিতাবে হজরত ঈসা, নুহ, ইব্রাহীম এবং মুসা (আ.) প্রমুখের নাম বার বার উল্লেখ করার তেমন অর্থাৎ বেশি যুক্তি বা কারণ কি ছিল?
এর কারণ, আল কোরআন অবশ্যই হজরত আদম (আ.)-এর সকল আওলাদের শিক্ষা এবং অনুসরণের জন্যে নাজিলকৃত সর্বশেষ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব।

আমানতের খিয়ানত : 

আল কোরআনের নিয়ামত হজরত আদম (আ.)-এর সকল আওলাদের জন্যে নাজিল হওয়া সত্ত্বেও তা আমরা মুসলিমগণ আল কোরআন কুক্ষিগত করে রেখে আল কোরআনের আমানত ও নিয়ামত খিয়ানত করে বসে আছি।
আল কোরআনুল কারীম যে, হজরত আদম (আ.)-এর সকল আওলাদের জন্য এ বিষয়টি আল কোরআনের বহু তথ্য থেকেও সুস্পষ্ট।

ইনসান ও বাশার :

 সমগ্র মানব জাতি বা নাস হলো হজরত আদম (আ.)-এর আওলাদ। আল কোরআনে যদিও মুসলিম শব্দটি এসেছে মাত্র ২ বার; কিন্তু, ইনসান (মানুষ) শব্দটি এসেছে ৬৫ বার। ইনসান শব্দের অর্থ হলো মানুষ।
ইনসান শব্দের আরেকটি বিকল্প শব্দ হলো বাশার। বাশার শব্দটি বহুবচনেও ব্যবহার হয়। বাশার শব্দটি আল কোরআনে এসেছে ৩৭ বার।

ইনসান ও নাস : 

একবচন ইনসান (মানুষ) শব্দটির বহুবচন হলো নাস। আল কোরআনের সর্বশেষ সূরা হলো সূরা নাস (১১৪ নং সূরা)। এই একটি ৬ আয়াতের সূরাতেই নাস বা মানুষ বা মানব জাতি শব্দটি এসেছে পাঁচ বার। কিন্তু, সমগ্র কোরআনে মুসলিম শব্দটি এসেছে মাত্র ২ বার। তবুও আমরা মুসলিমগণ সমগ্র মানব জাতির জন্য নাজিলকৃত কোরআনের আমানত এবং অবদান খিয়ানত করে জান্নাতের স্বপ্ন দেখছি। আল কোরআনের বাণী আমরা কেন ইনসান, নাস বা বাশারের নিকট হস্তান্তর করি না? কারণ আমরা বিশ্বাস করি আল কোরআন হয়তো শুধুমাত্র মুসলিমদের কিতাব।

মানব জাতির নবী ও রাসূল : 

আল কোরআন যদি শুধুমাত্র মুসলিমদের কিতাব হতো, তাহলে ইয়াহুদদের নবী হজরত মূসার (আ.) নাম আল কোরআনে কেন ১৩৬ বার উল্লেখ হয়েছে? হজরত মূসা (আ.) এবং বাইবেলে উল্লেখিত নাবী-রাসূলদের নবুওয়াত এবং রিসালাতে অবিশ্বাস করলে মুসলিম, ইয়াহুদ এবং নাসারা কারো ঈমান থাকে না।
হজরত মুহাম্মাদ (সা.) যে দ্বীন নিয়ে এসেছেন, হজরত নূহ (আ.), ঈসা (আ.), হারুন (আ.), দাউদ (আ.), ইয়াকুব (আ.) প্রমুখ ইসলাম ভিন্ন অন্য কোন ধর্ম অথবা দ্বীন প্রচারের জন্যে আসেননি।
যদি তাঁদের দ্বীন ইসলাম হতে ভিন্ন দ্বীন হতো, তাহলে হজরত নূহ (আ.)-এর নাম আল কোরআনে ৪৫ বার, হারুন (আ.)-এর নাম ২০ বার, দাউদ (আ.)-এর নাম ১৬ বার কোরআনে উল্লেখিত হতো না।
হজরত ইয়াকুব (আ.)-এর নাম আল কোরআনে এসেছে ১৬ বার, হজরত ইসমাঈল (আ.)-এর নাম এসেছে ১২ বার। হজরত ঈসা (আ.)-এর নাম এসেছে ২৫ বার। হজরত ইউনুস (আ.)-এর নাম উল্লেখ করা হয়েছে ৪ বার।
কুল এবং দাওয়াহ : কুল (বল) শব্দটি ছাড়াও আরেকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শব্দ আছে। এই শব্দটি হলো ‘দাওয়াহ’। এই শব্দটি (দাওয়াহ) আল কোরআনে এসেছে ১৮৩ বার। দাওয়াহ শব্দটির অর্থ হলো, আহ্বান। দাওয়াহ শব্দের অর্থটি হলো ‘তোমরা সকলে আহ্বান করো’। দাওয়াত বলতে আমরা বুঝি প্রধানত খাওয়ার দাওয়াত। এটা সত্য। কিন্তু, দাওয়াত শব্দের অর্থ শুধু খাওয়া, আহার ভোজন এবং পেট পূজার আহ্বান নয়। দাওয়াত দিয়ে ২-৫টা খেজুর খাওয়ানোতেও আন্তরিকতা প্রতিফলিত হয়। আধুনিক কালের পেট পূজা হয় না।
শুধুমাত্র দাওয়াহ শব্দটি ছাড়া দাওয়াহ শব্দ হতে উদ্ভূত অন্যান্য রিলেটেড সম্পর্কীয় এবং প্রাসঙ্গিক শব্দগুলো আল কোরআনে এসেছে ২১৫ বার। দাওয়াহ শব্দটি বিভিন্ন আকারে ২১৫ বার + ১৮৩ বার = ৩৯৮ বার আল কোরআনে ব্যবহার থেকে কি বুঝা যায় না যে, দাওয়াহর আমলটি ইকরাহ (৩ বার) এবং তিলাওয়াত (২ বার) এর আমল হতে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ?

কষ্টসাধ্য দাওয়াহর আমল : 

ইসলামের কথা বলা অপেক্ষা দাওয়াতের কাজটি অধিকতর কষ্টসাধ্য। তাই এই কষ্টসাধ্য দাওয়াহ (আহ্বান) এর কাজটি আমরা অত্যন্ত আকর্ষণীয় বহু শব্দে এবং অর্থে ব্যবহারও করে থাকি। এই আকর্ষণীয় কাজগুলো হলো- খাওয়ার দাওয়াতের মাধ্যমে পেটপূজা, ভোজন, পানাহার ইত্যাদি।
এরূপ দৈহিক কর্মের জন্য দাওয়াহ বা আহ্বান কালে রসনা বা জিহবা চর্চা অর্থে দাওয়াহ বা দাওয়াত শব্দটি ব্যবহার করার মধ্যে কোন দোষ বা পাপ নেই। কিন্তু দাওয়াহর যে মূল অর্থ হলো আল্লাহর দ্বীনের দিকে দাওয়াত এবং আহ্বান ঐ আমলটি অধিকতর ব্যয়বহুল এবং কষ্টসাধ্য বিধায় আমরা প্রায় ছেড়েই দিয়েছি।
কোন অমুসলিমকে দাওয়াহ বা ইসলাম গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে তাকে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত করা হলে তার জন্য অনেক ক্ষেত্রে পরিণতি হলো পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এবং বিতাড়িত হওয়া।
কষ্টসাধ্য দাওয়াহর একটি ঘটনা : আমার জানা মতে, দাওয়াহ সংক্রান্ত একটি ঘটনা আছে। আমার পরিচিত কোন একটি কিশোর তরুণ আল্লাহর রহমতে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। বাস্তব প্রতিক্রিয়া হয় তার পরিবারে অত্যন্ত বিরূপ এবং প্রবল।
তাকে স্বধর্মে ফিরিয়ে নিতে তার আত্মীয়স্বজন হাজার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। ঐ পরিবারের সকল সদস্য সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে, তাকে শ্মশানে গভীর রজনীতে ‘নর বলি’ দেয়া হবে। সকলেই এ সিদ্ধান্তে ছিলেন দৃঢ়চেতা।
কিন্তু, এ পারিবারিক এবং সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে একমাত্র বিশ্বাসঘাতকিনী হলেন কিশোরের গর্ভধারিণী এবং প্রসবকারিনী মাতৃদেবী। পারিবারিক দৃঢ় সিদ্ধান্তে বাকরুদ্ধ হয়ে নীরবতা অবলম্বন করলেও গভীর নিশীথে তিনি তার পুত্র সন্তানটিকে পলায়নে উদ্ধুদ্ধ করেন। পারিপার্শ্বিক এবং আর্থিক সহযোগিতা তাৎক্ষণিকভাবে যতটুকু সম্ভব সবটুকু করেছিলেন এবং সফল হয়েছিলেন। এ কিশোর তরুণ নওমুসলিমটি একটি সংস্থায় উপ-পরিচালক এবং আমার পরিচিত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল দাওয়াহ : মুসলিমদের ব্যক্তিগত এবং সমষ্টিগত অন্যতম প্রধান কাজ ছিল দাওয়াহ। এই উত্তম আমলটি আমরা ছেড়ে দিয়েছি। এটা কি আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.)-এর নবুওয়তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সর্বপ্রথম এবং জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমল বা কাজ ছিল না?
নাস-মানব জাতি : আল কোরআনুল কারীমে কি শুধুমাত্র মানব জাতির পিতা হজরত আদমের (আ.) এক মহান সন্তান মুহাম্মাদ (সা.)-এর অনুসারীদেরকে বলার জন্য নাজিল হয়েছিল? কোরআনের কথা কি নাস (মানব জাতি)-এর জন্যে নাজিল হয়নি?
যদি কোরআনের কথা শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্যই নাজিল হয়ে থাকে, তাহলে ২১৯ বার ‘নাস’ (মানব জাতি) শব্দটি কেন কোরআনে এসেছে?
আল কোরআনে নাস বা মানব জাতি (২১৯ বার), ইনসান বা মানুষ (৬২ বার) এবং বাশার বা সমর্থক (৩৭ বার) ইত্যাদি শব্দাবলী উল্লেখ দ্বারা কি বুঝা যায় না যে, কোরআন শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্য নয়? এটা হজরত আদম (আ.)-এর সকল আওলাদের জন্য।
জন্মগত ভাগ্য বনাম দুর্ভাগ্য : হাশরের ময়দানে জন্মগত অমুসলিমগণ তাদের নাজাতের জন্যে বহু অনুযোগ পেশ করতে পারেন। তার একটি হলো- কোন মুসলিম বা অমুসলিম জন্মের পূর্বে আল্লাহর কাছে দরখাস্ত করেনি, সে মুসলিম পরিবারে অথবা অমুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ করতে চায়।
মহান ¯্রষ্টা আল্লাহ তায়ালার সৃষ্ট জৈবিক প্রক্রিয়ায় কারো জন্ম হয়েছিল মুসলিম শিশু হিসেবে, কারো জন্ম হয়েছিল অমুসলিম পরিবারে।
সৌভাগ্যবান জন্মগত মুসলিমদের দায়িত্ব : অমুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ ক্ষেত্রে কোন শিশুর দায়িত্ব বা সম্মতি ছিল না। বরং যারা মুসলিম হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছেন, তাদের দায়িত্ব ছিল আল্লাহর দ্বীনের বাণী অমুসলিমদের নিকট পৌঁছানো। যারা এ দায়িত্ব এবং কর্তব্য পালন করেননি, ইহকালীন দাওয়াতী আমলে অবহেলার জন্য জন্মগত মুসলিমদের প্রথমেই পরজন্মে জাহান্নামের শাস্তি নির্ধারিত হওয়া স্বাভাবিক।
তাদের শাস্তির পর অমুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করে শিক্ষা, পরিবেশ, সুযোগ-সুবিধা এবং অন্যান্য কারণে আল্লাহ তায়ালার সঠিক দ্বীন খুঁজে যারা পায়নি, তাদের যথার্থ বিচার হওয়া স্বাভাবিক এবং যথাযথ।
জন্মগত মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর দ্বীন প্রচারের আমল যারা করেননি, তাদের বিচার না করে জন্মগত অমুসলিমদেরকে জাহান্নামে বা নরকের শাস্তি দেওয়া কতটুকু সঙ্গত হবে, তা গভীরভাবে বিবেচ্য। এ প্রবন্ধের ভুলত্রুটি সংক্রান্ত সমালোচনা একান্তভাবে কাম্য। (তথ্য সূত্র : আল মু’জামূল মুফাহারস লী আল ফজিল কোরআনুল কারীম। সংকলক : মুহাম্মাদ ফুয়াদ আবদুল বাকী, কায়রো, মিশর। 
** জরুরী হক কথা - মানুষ মরনশীল যে কোন সময়েই মৃত্যুদ্যুত হাজির হবে, আমরা কি প্রস্তুত।দুনিয়ার জীবন ক্ষনস্থায়ী, অনন্ত অসীম পরকাল/আখেরাতের কামিয়াবী/সাফল্যের জন্য নিয়মিত সালাত আদায় করি সকলকে কালিমার/ইসলামের দাওয়াত দেই, নিজে পরিপূর্ন মুসলিম হই আল্লাহ আমাদের খাঁটি মুমিন হিসাবে কবুল করুন আমিন

0 comments:

Post a Comment