Tuesday, April 28, 2015

সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েল

সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েল


আপনার নামায/সালাতের ভিতর যদি কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাইলে আপনাকে অবশ্যই সাহু সিজদা দিতে হবে যদি না দেন তাইলে আপনার নামায হবে না।[ ওয়াজিব সমূহ জানুন এই লিঙ্ক থেকে)  সাহু সিজদা দেয়ার নিয়ম হল শেষ রাকাতে আত্তাহিয়্যাতু পড়ে শুধু ডান দিকে সালাম ফিরিয়ে টি সিজদা দিতে হবে সিজদার মাঝখানে অবশ্যই তাসবীহ পরিমান সোজা হয়ে বসতে হবে


  তারপর যথারীতি আবার আত্তাহিয়্যাতু, দুরুদ শরীফ দোয়া মাসুরা পড়ে নামায শেষ করতে হবে তবে নামাযে যদি কোন ফরয তরক হয়ে যায় তাইলে সাহু সিজদা দিয়ে কোন লাভ হবে না আবার নতুন করে নামায পড়তে হবে অনেককেই দেখা যায় কোন কারন ছাড়াই সব নামাযের শেষে একটা সাহু সিজদা দিয়ে দেয় এটা ঠিক নয় আমি এখানে সহজ ভাবে নামাযে কখন সাহু সিজদা দিতে হবে আর কখন দিতে হবে না এই মাসলা- মাসায়েল গুলি নিয়ে আলোচনা করবো সাহু সিজদার এই মাসলা গুলি ছেলে মেয়ে উভয়ের নামাযের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য তবে আপনি যদি জামাতে নামায পড়েন তাইলে ইমাম সাহেব যদি সাহু সিজদা দেয় তাইলে আপনি দিবেন আর যদি আপনি জামাতে মাসবুক মানে রাকাত পরে উপস্থিত হন আর যদি আপনার নিজে পড়ার রাকাতে কোন ওয়াজীব তরক হয়ে যায় তাইলে আপনি সাহু সিজদা দিবেন

. ফরজ নামাযের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া ওয়াজীব যদি আপনি ফরজ নামাযের প্রথম রাকাত বা ২য় রাকাত বা উভয় রাকাতেই সুরা ফাতেহা ভুল বশত না পড়েন তাইলে আপনাকে সাহু সিজদা দিতে হবে আবার ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়া সুন্নত আপনি যদি যে কোন ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা ভুল বশত নাও পড়েন তাইলে আপনাকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না

. ফরজ নামাযের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো ওয়াজীব যদি আপনি ভুল বশত ফরজ নামাযের প্রথম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সূরা না পড়েন তাইলে আপনাকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে আবার ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সুরা পড়ার নিয়ম নেই তবে আপনি ভুল বশত ফরজ নামাযের ৩য়/৪র্থ রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য কোন সুরা পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না

. সুন্নত নফল স্কল নামাযেই সকল রাকাতেই সুরা ফাতেহা পড়া সুরা ফাতেহা পড়ার পর অন্য একটি সুরা মিলানো ওয়াজীবআপনি যদি যে কোন সুন্নত/নফল নামাযের যে কোন রাকাতে সুরা ফাতেহা বা সুরা ফাতেহার পর অন্য একটি সুরা না পড়েন তাইলে আপনি একটি ওয়াজীব তরক করলেন আপনাকে অবশ্যই সিজদায়ে সাহু দিতে হবে

. ভুল করে যে কোন রাকাতে রুকু বা সিজদা দিলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে

. সুরা ফাতেহা পড়ার পর এখন কি সুরা পড়বো এই চিন্তায় যদি তসবীহ পরিমান সময় চলে যায় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে অথবা কোন সুরার কোন আয়াত ভুলে গেছেন আয়াত কে স্মরন করার জন্য যদি তসবীহ পরিমান সময় চলে যায় তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবেফরয সুন্নত নামাযের ১ম বৈঠকে যদি ভুলে বার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেলেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে আবার ফরয সুন্নত নামাযের ১ম বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার পর যদি দুরুদ শরীফের আল্লাহুম্মা সাল্লি আলা মুহাম্মাদ পর্যন্ত পড়ে ফেলেন তাইলে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে তবে এরচেয়ে কম পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না তবে নফল নামাযের যেকোন বৈঠকে বার আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না

. যেকোন বৈঠকে আত্তাহিয়্যাতু পড়ার সময় যদি ভুলে সুরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে তবে নিয়ত বাধার সময় ছানার বদলে ভুলে দোয়া কুনুত পড়ে ফেললে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না

. / রাকাত বিশিষ্ট নামাযে প্রথম বৈঠক ভুলে গেছেন এবং ৩য় রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন, যদি অর্ধেকের কম দাঁড়িয়ে থাকেন তাইলে বসে পড়বেন এবং আত্তাহিয়্যাতু পড়ে ৩য় রাকাতের জন্য দাড়াবেন এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না আর যদি অর্ধেকের বেশি দাঁড়িয়ে যান তাইলে আর বসবেন না / রাকাত নামায শেষ করে শেষ বৈঠকে সিজদায়ে সাহু দিবেন

. যোহর এশার ৪র্থ রাকাতে বসতে মনে নাই একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে ৫ম রাকাতের জন্য দাঁড়িয়ে গেছেন তাও মনে হবার সাথে সাথে বসে পড়বেন আত্তাহিয়্যাতু দুরুদ শরীফ পড়ে সালাম ফিরাবেন এক্ষেত্রে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে নাআর যদি ৫ম রাকাতে সুরা ফাতেহা পড়ে ফেলেন এবং রুকুও করে ফেলেন তাইলেও বসে পড়বেন এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে আর যদি রুকু করার পরও মনে না হয় তাইলে আরো রাকাত পড়ে মোট রাকাত পড়বেন এক্ষেত্রে শেষ রাকাত নফল প্রথম রাকাত ফরয হিসাবে আদায় হল কিন্তু আসরের নামাযে ৪র্থ রাকাতে এই রকম ভুল হলে মোট রাকাতই পড়বেন কিন্তু রাকাত পুরাটাই নফল হবে কারন আসর নামাযের পর কোন নফল নামায নাই এক্ষেত্রে আপনাকে পুনরায় আসরের নামায পড়তে হবে

. নামায রাকাত পড়েছেন না রাকাত পড়েছেন এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাই আর যদি হঠাৎ করে এই সন্দেহ হয় তাইলে এই রাকাত কে ৩য় রাকাত ধরে আরেক রাকাত পড়ে নিবেন আর মন যদি ৪র্থ রাকাতের দিকে সায় দেয় তাইলে আরেক রাকাত পড়ার দরকার নেই এই অবস্থায় সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না আবার ১ম রাকাত পড়লেন না ২য় রাকাত পড়লেন এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাই আর যদি হঠাৎ করে এই সন্দেহ হয় তাইলে এই রাকাত কে ১ম রাকাত ধরে আত্তাহিয়্যাতু পড়বেন কারন এটা ২য় রাকাতও হতে পারে আবার ২য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেনকারন এটা ২য় রাকাত হতে পারে আবার ৩য় রাকাতেও আত্তাহিয়্যাতু পড়বেনকারন এটা ৪র্থ রাকাত হতে পারে তারপর ৪র্থ রাকাতে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফিরাবেন

১০. নামায শেষ হওয়ার পর সালাম ফিরানোর পর যদি নামায রাকাত পড়েছেন না রাকাত পড়েছেন এই রকম সন্দেহ যদি সব সময় হয়ে থাকে তাইলে এই সন্দেহের কোন ভিত্তি নাইআর যদি স্পষ্ট ভাবে মনে পড়ে যে নামায রাকাত পড়েছেন এবং আপনি কিবলামুখি হয়ে বসে আছেন এবং কারো সাথে কথা বলেন নি তাইলে সাথে সাথে দাঁড়িয়ে যেয়ে আরেক রাকাত পড়ে সিজদায়ে সাহু করে সালাম ফিরাবেন তবে কারো সাথে কথা বলে ফেললে নামায পুনরায় পড়তে হবে

১১. একই নামাযে সিজদায়ে সাহু করার একাধিক কারন পাওয়া গেলেও একটি সিজদায়ে সাহু করলেই হবে

১২. বিতর নামাযে দোয়া কুনুত না পড়েই রুকুতে চলে গেছেন বা দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য কিছু পড়ে ফেলেছেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে আর যদি দোয়া কুনুতের জায়গায় অন্য কিছু পড়ে ফেলেছেন কিন্তু মনে হবার সাথে সাথে দোয়া কুনুত পড়ে ফেলেছেন তাইলে সিজদায়ে সাহু দিতে হবে না

১৩. ইমাম সাহেব নামায পড়া শুরু করার রাকাত বা রাকাত পরে যিনি উপস্থিত হন উনাকে মাসবুক বলে
 মাসবুক ব্যক্তি যদি ভুলে ইমামের সাথে বা আগে সালাম ফিরিয়ে ফেলে তাহলে তার উপর নামাযের শেষাংসে সাহু সেজদা দেয়া আবশ্যক নয় আর যদি ইমাম সালাম ফিরানোর পর সালাম ফিরায়, তাহলে তার উপর নামাযের শেষাংসে সাহু সেজদা দেয়া ওয়াজিব আর আপনি যে জামাতে উপস্থিত হয়েছেন সেই জামাতের ইমাম সাহেব যদি সিজদায়ে সাহু দেয় তাইলে আপনি ডান দিকে সালাম না ফিরিয়ে ইমামের সাথে সাহু সিজদা দিবেন যদি ভুলে ইমামের সাথে সালাম ফিরিয়ে সাহু সিজদা দেন তাইলে কোন সমস্যা নেই কিন্তু ইচ্ছা করে ইমামের সাথে ডান দিকে সালাম ফিরালে নামায নতুন করে পড়তে হবে আর ইমাম সাহেব বাম দিকে সালাম ফিরানোর পরই আপনি উঠে বাকী নামায গুলি পড়বেন

তথ্যসূত্রঃ  সিজদায়ে সাহুর এই মাসলা-মাসায়েল গুলি হাকীমুল উম্মত মাওলানা আশরাফ আলী থানভীর লেখা "বেহেশতী জেওর" বই থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে।

উপরোক্তা মাসালা মাসায়েল গুলো সবাই সাথে শেয়ার করুন  এবং সবাইকে জানান।

0 comments:

Post a Comment