বাংলাদেশে তাবলীগের কাজ অতীত থেকে বর্ত মান
নিযামুদ্দীন।বিশ্ব তাবলীগ জামাতের প্রাণকেন্দ্র।মারকায।একদা শামছুক হক ফরিদপুরী রহ. সেই নিযামুদ্দীনে গেলেন।
হযরতজী ইলিয়াস রহ. এর সাক্ষাৎ করলেন।তাকে পেয়ে ইলিয়াস রহ. দারুন মুগ্ধ হলেন।বুকের সাথে মিলিয়ে ধরলেন।আদর করে দুআ করলেন।বললেন,তোমাকে কিন্তু তোমার দেশের দায়ীত্ব নিতে হবে।
শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. সম্মতি জ্ঞাপন করলেন।ফিরে এলেন দেশে।জড়িয়ে পড়লেন দীনের নানা কাজে।তাবলীগ জামাতের কাজের সূচনা করার সময়ই পাচ্ছেন না।
তবে মনে মনে একজন মুখলিস মানুষ খুঁজছেন।একজন যোগ্য লোক খুঁজছেন।যার দ্বারা এ দাওয়াতী কাজের সূচনা হবে।শুধুই এগিয়ে যাবেন।
মাওলানা আব্দুল হালীম সাহেব রহ.। খুলনার মোল্লাহাট থানার উদয়পুর গ্রামের এক প্রসিদ্ধ পীর।তার বাড়িতে এক বিশাল মাদরাসা।একদা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. তার মাদরাসা দেখতে উদয়পুরে গেলেন।
হঠাৎ তার অনুসন্ধানী দৃষ্টি নিপতিত হল মাওলানা আব্দুল আজীয সাহেবের উপর।এক নজরেই যেন অনেক কিছু জেনে ফেললেন।বুঝে ফেললেন।
তাই তাকে কাছে ডাকলেন।তার কন্ঠ কোমল।বললেন,বাবা!তুমি এখানে কি কর?আব্দুল আজিয সাহেব রহ. বললেন,হুজুর আমি এ মাদরাসার শিক্ষক। পীর সাহেবের জামাতা।
এরপর শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. পীর সাহেবের সাথে দীর্ঘ পরামর্শ করলেন ও তাকে কলকাতার মারকাযে পাঠিয়ে দিলেন।তারপর দিল্লী নিযামুদ্দীন ও মেওয়াতে পাঠালেন।মাওলানা ইউসুফ সাহেব রহ. এর সান্নিধ্যে থেকে তাবলীগের কাজটি পরিপূর্ণভাবে শিখে এলেন।
এবার দেশে তাবলীগের কাজ শুরু করতে হবে।উদয়পুর মাদরাসা মসজীদকে মারকায বানানো হল।বাংলার জমিনে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ শুরু হল।শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. এর পরামর্শে মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. আমীর হলেন।কিছুদিন পর অসুবিধা দেখা দিল।একই স্থানে তালীম-তাআল্লুম আর দাওয়াত-তাবলীগের কাজে কিছুটা বিঘ্নতা সৃষ্টি হতে লাগলো।
তাই আবার পরামর্শ হল।শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. নানা কথা চিন্তা করলেন।তারপর সিদ্ধান্তের আলোকে তাবলীগ জামাতের দ্বিতীয় মারকায নির্ধারিত হল খুলনার তেরখানা বামন ডাঙ্গায়।অর্থাৎ মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. এর গ্রামের বাজার-মসজিদে।
এরপর এক ইজতেমায় শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,বাবা আব্দুল আজিয,গ্রামে মারকায হয় না।খুলনা শহরে মারকায নেয়া দরকার।
হেলাতলার মুতাওয়াল্লী সাহেবের সাথে শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. কথা বললেম।মারকায নেয়া হল তালাবওয়ালা মসজিদে।জোরেশোরে কাজ শুরু হল।সর্বদা মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. মারকাযে থাকেন।সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেন।
এরপর বেশ কয়েক বৎসর কেটে গেল।ইজতেমা হল।ইজতেমার পর পরামর্শ মজলিশ বসল।শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,বাবা আব্দুল আজিয,দেহ এক জায়গায় আর রুহ আরেক জায়গায়,এভাবে কিন্তু কাজে বরকত হয় না।
এ মারকাজ আঞ্চলিক মারকায হিসেবে থাকুক।তুমি বরং ঢাকায় লালবাগ শাহী মসজীদে চলে আস।তাই হল।এবার মারকায চলে এল লালবাগ শাহী মসজিদে।কিছুদিন পর আবার বিপত্তি দেখা গেল।জায়গায় সংকুলান হচ্ছে না।
শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.বললেন,দেখ,মসজিদের সাথে মাঠ কোথায় আছে।তালাশ শুরু হল।অদূরেই পাওয়া গেল এক মসজিদ।সাথে একটি খোলা মাঠ।কেল্লার উত্তর-পশ্চিম দিকের খান মুহাম্মদ মসজিদ।পরামর্শ হল।মারকাজ চলেগেল সেখানে।মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. নতুন মারকাযে চলে এলেন।
কয়েক বৎসর পর খান মুহাম্মদ মসজিদ মাঠেও জায়গা সংকুলান হল না।আবার পরামর্শ মজলিস বসল।শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,খুজে দেখ,ঢাকা শহরে বড় মাঠের পাশে কোথায় মসজিদ আছে?
চলল অনুসন্ধান।শেষে পাওয়া গেল একটি মসজিদ।রমনা পার্কের বিশাল ময়দানের পাশে ছোট্ট একটি মসজিদ।মালওয়ালী মসজিদ।একেবারে ছোট্ট মসজিদ।
সামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,কোন চিন্তা নেই,হোক মসজিদ ছোট।প্রয়োজনে পার্কের জায়গা নিয়ে মসজিদ বড় করা যাবে।শেষে মালওয়ালী মসজিদে মারকায কায়েম করা হল।
এ মসজিদই এখন দাওয়াত ও তাবলীগের কেন্দ্রীয় মারকায।বাংলাদেশের মারকায।ছয় নম্বর দাওয়াতী কাজের ষষ্ঠ মসজিদকেই আল্লাহ তায়ালা মারকায হিসেবে কবুল করলেন।
এভাবে শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. এর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলল।ছড়িয়ে পড়ল জেলা থেকে জেলান্তরে,দেশ থেকে দেশান্তরে।
সেই ছোট্ট মালওয়ালী মসজিদ এখন বিশাল জামে মসজিদ।ঢাকা শহরের এক খ্যাতনামা মসজিদ।দিনের পর দিন সেই মসজিদ বৃহৎ হতে বৃহৎ আকার ধারণ করছে।
আর ইজতেমার স্থান চলেগেছে টঙ্গীতে।তুরাগ নদীর তীরে।সেখানেই এখন বিশ্ব ইজতেমা হয়।লাখ লাখ মানুষ সেখানে ছুটে আসে।এশিয়া,আফ্রিকা আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসে।অস্ট্রেলিয়া আর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসে।
হিদায়াতের নূর নিয়ে আবার ফিরে যায় নিজ নিজ দেশে।বিশ্ব-মানবতার হিদায়াতের ফিকির নিয়ে এখন তাবলীগ জামাত কাজ করছে।
বিশ্বের প্রত্যেকটি জনবসতিতে তাবলীগ জামাতের লোকেরা হিদায়াতের আলো পৌছে দিচ্ছে।জান্নাতের আহব্বান পৌছে দিচ্ছে।
(যাদের হাতে শুরু হয় এদেশে তাবলীগের কাজ -
নিযামুদ্দীন।বিশ্ব তাবলীগ জামাতের প্রাণকেন্দ্র।মারকায।একদা শামছুক হক ফরিদপুরী রহ. সেই নিযামুদ্দীনে গেলেন।
হযরতজী ইলিয়াস রহ. এর সাক্ষাৎ করলেন।তাকে পেয়ে ইলিয়াস রহ. দারুন মুগ্ধ হলেন।বুকের সাথে মিলিয়ে ধরলেন।আদর করে দুআ করলেন।বললেন,তোমাকে কিন্তু তোমার দেশের দায়ীত্ব নিতে হবে।
শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. সম্মতি জ্ঞাপন করলেন।ফিরে এলেন দেশে।জড়িয়ে পড়লেন দীনের নানা কাজে।তাবলীগ জামাতের কাজের সূচনা করার সময়ই পাচ্ছেন না।
তবে মনে মনে একজন মুখলিস মানুষ খুঁজছেন।একজন যোগ্য লোক খুঁজছেন।যার দ্বারা এ দাওয়াতী কাজের সূচনা হবে।শুধুই এগিয়ে যাবেন।
মাওলানা আব্দুল হালীম সাহেব রহ.। খুলনার মোল্লাহাট থানার উদয়পুর গ্রামের এক প্রসিদ্ধ পীর।তার বাড়িতে এক বিশাল মাদরাসা।একদা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. তার মাদরাসা দেখতে উদয়পুরে গেলেন।
হঠাৎ তার অনুসন্ধানী দৃষ্টি নিপতিত হল মাওলানা আব্দুল আজীয সাহেবের উপর।এক নজরেই যেন অনেক কিছু জেনে ফেললেন।বুঝে ফেললেন।
তাই তাকে কাছে ডাকলেন।তার কন্ঠ কোমল।বললেন,বাবা!তুমি এখানে কি কর?আব্দুল আজিয সাহেব রহ. বললেন,হুজুর আমি এ মাদরাসার শিক্ষক। পীর সাহেবের জামাতা।
এরপর শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. পীর সাহেবের সাথে দীর্ঘ পরামর্শ করলেন ও তাকে কলকাতার মারকাযে পাঠিয়ে দিলেন।তারপর দিল্লী নিযামুদ্দীন ও মেওয়াতে পাঠালেন।মাওলানা ইউসুফ সাহেব রহ. এর সান্নিধ্যে থেকে তাবলীগের কাজটি পরিপূর্ণভাবে শিখে এলেন।
এবার দেশে তাবলীগের কাজ শুরু করতে হবে।উদয়পুর মাদরাসা মসজীদকে মারকায বানানো হল।বাংলার জমিনে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ শুরু হল।শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. এর পরামর্শে মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. আমীর হলেন।কিছুদিন পর অসুবিধা দেখা দিল।একই স্থানে তালীম-তাআল্লুম আর দাওয়াত-তাবলীগের কাজে কিছুটা বিঘ্নতা সৃষ্টি হতে লাগলো।
তাই আবার পরামর্শ হল।শামসুল হক ফরিদপুরী রহ. নানা কথা চিন্তা করলেন।তারপর সিদ্ধান্তের আলোকে তাবলীগ জামাতের দ্বিতীয় মারকায নির্ধারিত হল খুলনার তেরখানা বামন ডাঙ্গায়।অর্থাৎ মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. এর গ্রামের বাজার-মসজিদে।
এরপর এক ইজতেমায় শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,বাবা আব্দুল আজিয,গ্রামে মারকায হয় না।খুলনা শহরে মারকায নেয়া দরকার।
হেলাতলার মুতাওয়াল্লী সাহেবের সাথে শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. কথা বললেম।মারকায নেয়া হল তালাবওয়ালা মসজিদে।জোরেশোরে কাজ শুরু হল।সর্বদা মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. মারকাযে থাকেন।সার্বিক দিক-নির্দেশনা দেন।
এরপর বেশ কয়েক বৎসর কেটে গেল।ইজতেমা হল।ইজতেমার পর পরামর্শ মজলিশ বসল।শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,বাবা আব্দুল আজিয,দেহ এক জায়গায় আর রুহ আরেক জায়গায়,এভাবে কিন্তু কাজে বরকত হয় না।
এ মারকাজ আঞ্চলিক মারকায হিসেবে থাকুক।তুমি বরং ঢাকায় লালবাগ শাহী মসজীদে চলে আস।তাই হল।এবার মারকায চলে এল লালবাগ শাহী মসজিদে।কিছুদিন পর আবার বিপত্তি দেখা গেল।জায়গায় সংকুলান হচ্ছে না।
শামছুল হক ফরিদপুরী রহ.বললেন,দেখ,মসজিদের সাথে মাঠ কোথায় আছে।তালাশ শুরু হল।অদূরেই পাওয়া গেল এক মসজিদ।সাথে একটি খোলা মাঠ।কেল্লার উত্তর-পশ্চিম দিকের খান মুহাম্মদ মসজিদ।পরামর্শ হল।মারকাজ চলেগেল সেখানে।মাওলানা আব্দুল আজিয সাহেব রহ. নতুন মারকাযে চলে এলেন।
কয়েক বৎসর পর খান মুহাম্মদ মসজিদ মাঠেও জায়গা সংকুলান হল না।আবার পরামর্শ মজলিস বসল।শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,খুজে দেখ,ঢাকা শহরে বড় মাঠের পাশে কোথায় মসজিদ আছে?
চলল অনুসন্ধান।শেষে পাওয়া গেল একটি মসজিদ।রমনা পার্কের বিশাল ময়দানের পাশে ছোট্ট একটি মসজিদ।মালওয়ালী মসজিদ।একেবারে ছোট্ট মসজিদ।
সামছুল হক ফরিদপুরী রহ. বললেন,কোন চিন্তা নেই,হোক মসজিদ ছোট।প্রয়োজনে পার্কের জায়গা নিয়ে মসজিদ বড় করা যাবে।শেষে মালওয়ালী মসজিদে মারকায কায়েম করা হল।
এ মসজিদই এখন দাওয়াত ও তাবলীগের কেন্দ্রীয় মারকায।বাংলাদেশের মারকায।ছয় নম্বর দাওয়াতী কাজের ষষ্ঠ মসজিদকেই আল্লাহ তায়ালা মারকায হিসেবে কবুল করলেন।
এভাবে শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. এর প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় দাওয়াত ও তাবলীগের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলল।ছড়িয়ে পড়ল জেলা থেকে জেলান্তরে,দেশ থেকে দেশান্তরে।
সেই ছোট্ট মালওয়ালী মসজিদ এখন বিশাল জামে মসজিদ।ঢাকা শহরের এক খ্যাতনামা মসজিদ।দিনের পর দিন সেই মসজিদ বৃহৎ হতে বৃহৎ আকার ধারণ করছে।
আর ইজতেমার স্থান চলেগেছে টঙ্গীতে।তুরাগ নদীর তীরে।সেখানেই এখন বিশ্ব ইজতেমা হয়।লাখ লাখ মানুষ সেখানে ছুটে আসে।এশিয়া,আফ্রিকা আর ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে আসে।অস্ট্রেলিয়া আর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে আসে।
হিদায়াতের নূর নিয়ে আবার ফিরে যায় নিজ নিজ দেশে।বিশ্ব-মানবতার হিদায়াতের ফিকির নিয়ে এখন তাবলীগ জামাত কাজ করছে।
বিশ্বের প্রত্যেকটি জনবসতিতে তাবলীগ জামাতের লোকেরা হিদায়াতের আলো পৌছে দিচ্ছে।জান্নাতের আহব্বান পৌছে দিচ্ছে।
সূত্র : মুযাহীদে আযম আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী রহ. - নাসীম আরাফাত-পৃ.১২৪- ২৬
0 comments:
Post a Comment