Saturday, June 18, 2016

ইসলামে বাবার মর্যাদা

ইসলামে বাবার মর্যাদা

জুন মাসের তৃতীয় রোববার বিশ্বজুড়ে পালিত হয় বাবা দিবস। এ দিবস উপলক্ষে পৃথিবীর সব বাবার প্রতি রইল গভীর শ্রদ্ধা। আর যেসব বাবা দুনিয়া থেকে বিদায় হয়েছেন, তাদের জন্য রইল অনেক দোয়া। বস্তুত বাবার মাধ্যমেই সন্তানের জীবনের শুরু। 
কোনো সন্তান বাবার ঋণ কখনো পরিশোধ করতে পারে না। কঠোর শাসন, কোমল ভালোবাসা আর ত্যাগে অগ্রগামী যিনি, তিনিই তো বাবা। বাবারা যে কোনো ধরনের দুঃখ-কষ্ট অকাতরে সহ্য করেন। সবসময় চেষ্টা করেন সামান্য কষ্ট যেন সন্তানকে স্পর্শ না করে। সন্তানের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের কথা ভেবে সারাজীবন অক্লান্ত পরিশ্রম করেন। তারপরও বাবাদের সঙ্গে আমাদের সমাজের অনেকেই খারাপ আচরণ করে থাকেন। এটা ইসলাম বিরুদ্ধ কাজ; হাদিস বিরুদ্ধ কাজ; কোরান বিরুদ্ধ কাজ। এ কাজের প্রতি স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা এসেছে শরিয়তে-ইসলামে। 


সাহাবি হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘আমি নবী করিমকে (সা.) জিজ্ঞেস করলাম, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় কাজ কোনটি? তিনি বললেন সময়মতো নামাজ পড়া। আমি বললাম তারপর কোনটি? তিনি বললেন পিতা-মাতার সঙ্গে উত্তম আচরণ করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম তারপর কোনটি? তিনি বললেন আল্লাহর পথে জিহাদ করা।-বুখারি ও মুসলিম

এই হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে, আল্লাহর তিনটি অতি প্রিয় কাজের মধ্যে একটি হলো বাবা-মা’র সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা। অন্য আরেক হাদিসে বলা হয়েছে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার আমল বন্ধ হয়ে যায়। তবে তিনটি আমল যোগ হতে থাকে-১. সদকায়ে জারিয়া, ২. কল্যাণময় শিক্ষা ও ৩. এমন সৎ সন্তান যে মৃত পিতা-মাতার জন্য দোয়া করে।’ -মুসলিম

এই হাদিসে ‘সদকায়ে জারিয়া’ বলতে বোঝানো হয়েছে এমন জনসেবার কাজ, যা দ্বারা বছরের পর বছর মানুষ উপকৃত হয়। তা দ্বারা যতদিন মানুষ উপকৃত হবে, ততদিন এই সেবাদানকারীর আমলনামায় নেক আমল বা সওয়াব যোগ হবে। আর ‘কল্যাণময় শিক্ষা’ বলতে এমন জ্ঞান ও শিক্ষার কথা বলা হয়েছে, যার ফলে মানুষ প্রজন্ম পর প্রজন্ম আল্লাহর পথে চলতে থাকে। আর সৎ সন্তানের বিষয়টি সবার কাছে স্পষ্ট। হাদিসে আছে, মৃত ব্যক্তির জন্য সৎ সন্তানের দোয়া অনেক উপকারী।
অনেকে তার বৃদ্ধ বাবা মাকে প্রবীন নিবাসকেন্দ্রে পাঠিয়ে দায়িত্ব শেষ করেন, যা ইসলাম কোনভাবেই সমর্থন করে না। তাই শুধু দিনসর্বস্ব আনুষ্ঠানিকতা নয়, মনে প্রানে বাবা মাকে সর্বদাই শ্রদ্ধা ও সম্মানের চোখে দেখতে হবে তাদের সাথে উত্তম আচরন করতে হবে, যেমনি তারা আমাদের সাথে শৈশবে করেছে। এটাই হোক বাবা দিবসের অঙ্গীকার।

লিখক - মুফতি এনায়েতুল্লাহ,শিক্ষক ও কলামিস্ট 

0 comments:

Post a Comment