জঙ্গীবাদ ও সন্ত্রাস দমনে ইসলাম
ইসলাম
শব্দটি আরবি ‘সিলমুন’ শব্দ থেকে উত্কলিত। এর অর্থ শান্তি, নিরাপত্তা, আনুগত্য, আত্মসর্ম্পণ,
সন্ধি, বিরোধিতা, পরিত্যাগ ইত্যাদি। ইসলাম ন্যায় ও সাম্যের ধর্ম। দেখি ইসলামে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ ----
ইসলামী উম্মাহকে মধ্যমপন্থী তথা উত্তম ও ন্যায়পরায়ণ উম্মাহ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে। মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি।
ইসলামী উম্মাহকে মধ্যমপন্থী তথা উত্তম ও ন্যায়পরায়ণ উম্মাহ হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। মানুষকে সৃষ্টি করা হয়েছে আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে। মানুষ পৃথিবীতে আল্লাহর খলিফা বা প্রতিনিধি।
কোনো মানুষকে হত্যা করার কিংবা পৃথিবীতে
ধ্বংসাত্মক কাজ (করার শাস্তি বিধান) ছাড়া (অন্য কোনো কারণে) কেউ যদি কাউকে হত্যা
করে, সে যেন গোটা মানব জাতিকেই হত্যা করলো; (আবার এমনিভাবে) যদি কেউ একজনের প্রাণ
রক্ষা করে তবে সে যেন গোটা মানব জাতিকেই বাঁচিয়ে দিলো। (সূরা মায়িদা-৩২)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিনে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে বিচার করা হবে, তা তাদের মধ্যে সংঘটিত রক্তপাত ও হত্যার বিচার। (বোখারী, মুসলিম)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যেখানে কোনে ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, সেখানে যেনো কেউ উপস্থিত না থাকে। কারণ এ হত্যাকান্ডের সময় যে ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে রক্ষা করার চেষ্টা করবে না, তার ওপরও অভিশাপ অবতীর্ণ হবে। (বায়হাকী)
আত্মহত্যা সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে আত্মহত্যা করলো, সে ব্যক্তি জাহান্নামের আগুনে চিরদিনই পড়ে থাকবে। কখনোই সেখান থেকে মুক্তি পাবে না। যে লোক বিষ পান করে আত্মহত্যা করলো, সে জাহান্নামের আগুনে চিরকালই নিজ হাতে বিষ পান করতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি কোনো অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করলো, সে জাহান্নামে চিরকাল ধরে সেই অস্ত্র দিয়েই নিজেকে আঘাত করতে থাকবে। (বোখারী, মুসলিম)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কিয়ামতের দিনে মানুষের মধ্যে সর্বপ্রথম যে বিচার করা হবে, তা তাদের মধ্যে সংঘটিত রক্তপাত ও হত্যার বিচার। (বোখারী, মুসলিম)
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যেখানে কোনে ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, সেখানে যেনো কেউ উপস্থিত না থাকে। কারণ এ হত্যাকান্ডের সময় যে ব্যক্তি উপস্থিত থাকবে এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে রক্ষা করার চেষ্টা করবে না, তার ওপরও অভিশাপ অবতীর্ণ হবে। (বায়হাকী)
আত্মহত্যা সম্পর্কে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে ফেলে দিয়ে আত্মহত্যা করলো, সে ব্যক্তি জাহান্নামের আগুনে চিরদিনই পড়ে থাকবে। কখনোই সেখান থেকে মুক্তি পাবে না। যে লোক বিষ পান করে আত্মহত্যা করলো, সে জাহান্নামের আগুনে চিরকালই নিজ হাতে বিষ পান করতে থাকবে। আর যে ব্যক্তি কোনো অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করলো, সে জাহান্নামে চিরকাল ধরে সেই অস্ত্র দিয়েই নিজেকে আঘাত করতে থাকবে। (বোখারী, মুসলিম)
সাম্প্রতিক
বছরগুলোয় নাইজেরিয়ায় আমেরিকান দুতাবাসে, ভারতের পার্লামেন্ট ভবনসহ বিভিন্ন স্থানে,
আমেরিকার টুইন টাওয়ারে, বৃটেনের পাতাল রেলে, তুরস্কের বিভিন্ন বিপনী কেন্দ্রে, ফ্রান্সের
রেলওয়ে স্টেশনে, জর্ডানের পাঁচ তারকা হোটেলে, পাকিস্তানের ধর্মীয় উপাসনালয়সহ বিভিন্ন
স্থানে, সউদী আরবের বিভিন্ন স্থানে, মিশরে শপিং সেন্টারে, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, ইরাক,
ইরান ও আফগানিস্থানের বিভিন্ন স্থানে, বাংলাদেশে আদালতে, ধর্মীয় উপাসনালয়ে, রাজনৈতিক
কার্যালয় এবং সমাবেশে ব্যাপক সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে অগণিত মানুষ হত্যা করা
হয়েছে, মূল্যবান সম্পদ ধ্বংস করা হয়েছে ও অসংখ্য মানুষকে চিরতরে পঙ্গু বানিয়ে দেয়া
হয়েছে।
ইসলাম-মুসলমান বনাম সন্ত্রাসবাদ
আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর আইন অনুসরণের ক্ষেত্রে দুই ধরনের পদ্ধতি দিয়েছেন। মানুষ ব্যতীত অন্যান্য সমগ্র সৃষ্টির জন্য তাঁর আইন পালন বাধ্যতামূলক করেছেন। চিন্তাবিদগণ সাধারণ দৃষ্টিতে যা বুঝেন তা হলো, তিনি যদি অন্যান্য সকল সৃষ্টির জন্য তাঁর আইন অনুসরণ বাধ্যতামূলক না করতেন, তাহলে মানুষসহ সমগ্র সৃষ্টি ক্ষতিগ্রস্ত হতো। যেমন মহাশূন্যে গ্রহ, নক্ষত্র, ছায়াপথ, নিহারীকাপুঞ্জ, ব্লাকহোল ও অন্যান্য যা কিছুই রয়েছে, এসব কিছুর পরিভ্রমণের জন্য গতিপথ বা পরিভ্রমণের পথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, এসব পথে ওগুলো চলতে বাধ্য। ওসব সৃষ্টিসমূহের পরিভ্রমণের পথে আল্লাহ তা’য়ালা যদি স্বাধীনতা দিতেন, তাহলে পরিভ্রমণের পথে একটির সাথে আরেকটির সংঘর্ষ ছিলো অবশ্যম্ভাবী এবং সেগুলো স্বয়ং যেমন ধ্বংস হতো তেমনি অন্যান্য সৃষ্টির জন্যও মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতো।অপরদিকে আল্লাহ তা’য়ালা তাঁর আইন পালনের ক্ষেত্রে একমাত্র মানুষকেই স্বাধীনতা দিয়েছেন এবং সতর্ক করে দিয়ে পবিত্র কোরআনে এ কথাও উল্লেখ করেছেন যে, ‘আলো-অন্ধকারের পথ বা সত্য ও মিথ্যার মধ্যে সুস্পষ্ট পার্থক্য করে দেয়া হয়েছে।’ কেউ ইচ্ছে করলে আলোর পথ বা সত্যপথ অনুসরণ করে দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তির পথে এগিয়ে যেতে পারে, এ স্বাধীনতা যেমন মানুষের রয়েছে তেমনি সে অন্ধকার পথ অনুসরণ করে পৃথিবী ও আখিরাতে নিজেকে ধ্বংসও করে দিতে পারে, এ স্বাধীনতাও মানুষের রয়েছে। একই সাথে মহান আল্লাহ আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে মানব মন্ডলীকে এ কথাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, ‘ইসলামই মানুষের জন্য একমাত্র মনোনীত জীবন ব্যবস্থা।’
সমগ্র সৃষ্টি জগতের মালিক এ কথাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, ইসলাম ব্যতীত অন্য কোনো আদর্শ কেউ যদি অনুসরণ করে, তাহলে সে নিশ্চিতভাবে পৃথিবী ও আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যে ব্যক্তি নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করবে, শান্তি, স্বস্তি ও সার্বিক নিরাপত্তার লক্ষ্যে তার জন্য আল্লাহর বিধান অনুসরণ করা অবশ্যই বাধ্যতামূলক। আল্লাহর বিধান অনুসরণ না করে কেউ যদি নিজেকে মুসলিম হিসেবে দাবি করে, আল্লাহ তা’য়ালার কাছে তার সে দাবির কানাকড়িরও মূল্য নেই। কারণ ‘মুসলিম ও ইসলাম’ এই শব্দ দুটো একটির সাথে আরেকটি অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত, পরস্পর সম্পূরক এবং অবিচ্ছিন্ন। এই শব্দ দুটোর মূলেই নিহিত রয়েছে মানুষের জন্য শান্তি, সমৃদ্ধি, উন্নতি, প্রগতি, স্বস্তি, নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গীবাদের বিভীষিকামুক্ত শঙ্কাহীন এক উন্নত জীবন-যাপনের পরিবেশ।
‘ছিলমুন’ শব্দ থেকে ‘ইসলাম’ শব্দের উৎপত্তি এবং এর অর্থ হলো শান্তি। আর মুসলিম শব্দের অর্থ ‘আত্মসমর্পণকারী’। আল্লাহ তা’য়ালা মানবমন্ডলীর শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তা, উন্নতি, সমৃদ্ধি, প্রগতি ও শঙ্কামুক্ত নিরাপত্তাপূর্ণ যে বিধানাবলী দান করেছেন, এর সমষ্টির নামই হলো ইসলাম এবং এই বিধানাবলীর নিকট যে মানুষ আত্মসমর্পণ করেছে বা নিঃশর্তে দ্বিধাহীন চিত্তে মেনে নিয়ে অনুসরণ করেছে, সে-ই হলো মুসলমান।
সহজ কথায় সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গীবাদের বিপরীতে শান্তি, স্বস্তি, উন্নতি ও নিরাপত্তা দানের নিশ্চয়তামূলক বিধানের নিকট যে মানুষ তার সমগ্র সত্তাকে সমর্পণ করেছে, সেই হলো মুসলমান। এ কারণেই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘোষণা করেছেন, ‘যে ব্যক্তির হাত ও মুখের কথা থেকে অন্য মানুষ নিরাপদ নয়, সে ব্যক্তি মুসলমান নয়।’
যে আল্লাহ তা’য়ালা মানুষের নিরাপত্তার প্রতীক ও শান্তির নিশ্চয়তামূলক জীবন বিধান ইসলামকেই মানুষের জন্য একমাত্র জীবন বিধান হিসেবে মনোনীত করেছেন, সেই আল্লাহ তা’য়ালার নিরানব্বইটি নামের মধ্যে গুণবাচক নামসমূহের একটি নাম হলো ‘সালাম’ অর্থাৎ শান্তিদাতা। অপরদিকে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সম্পর্কে ‘সালাম’ নামের অধিকারী আল্লাহ তা’য়ালা স্বয়ং পবিত্র কোরআনের সূরা আম্বিয়ায় ঘোষণা করেছেন, ‘হে নবী! আপনাকে আমি সমগ্র জগতের জন্য করুণার প্রতীক হিসেবেই প্রেরণ করেছি।’
অর্থাৎ আল্লাহ তা’য়ালা বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ‘করুণার প্রতীক তথা নবীয়ে রহমত’ উপাধি দান করেছেন। তাহলে বিষয়টি এভাবেই স্পষ্ট হয়ে গেলো যে, ‘শান্তিদাতা’ সালাম আল্লাহ তা’য়ালা সন্ত্রাসবাদ-জঙ্গীবাদের বিপরীতে ‘শান্তি, স্বস্তি, নিরাপত্তা, সুখ-সমৃদ্ধি, উন্নতি-প্রগতি ও শঙ্কামুক্ত জীবন বিধান শান্তির আদর্শ ইসলামকে’ করুণার মূর্তপ্রতীক নবীয়ে রহমতের কাছে প্রেরণ করেছেন এবং তিনি এ সর্বোত্তম আদর্শ পৃথিবীতে বাস্তবায়ন করেও দেখিয়েছেন।
মুসলিম
মিল্লাতের পিতা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস্ সালাম স্বয়ং কা’বাস্থান-দোয়া
কবুলের স্থানে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর কাছে
দোয়া করেছেন-
إِذْ
قَالَ
إِبْرَاهِيمُ
رَبِّ
اجْعَلْ
هَذَا
بَلَدًا
آَمِنًا
ইবরাহীম
যখন বলেছিলো, হে মালিক! এ শহরকে তুমি শান্তি ও নিরাপত্তার শহর বানিয়ে দাও। (সূরা
বাকারা-১২৬)
যে জাতির পিতা স্বয়ং সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, সেই জাতি কি সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদে নিজেদেরকে জড়াতে পারে? ইসলাম মানুষকে আল্লাহ তা’য়ালার কাছে সহজ-সরল শান্তির পথ কামনা করতে শিক্ষা দিয়েছে। নামায আদায়কারী ব্যক্তিগণ প্রত্যেক দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে বারবার সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করে থাকেন। এই সূরার মাধ্যমে তাঁরা আল্লাহ তা’য়ালার কাছে দোয়া করতে থাকেন-
যে জাতির পিতা স্বয়ং সন্ত্রাসবাদ আর জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করলেন, সেই জাতি কি সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদে নিজেদেরকে জড়াতে পারে? ইসলাম মানুষকে আল্লাহ তা’য়ালার কাছে সহজ-সরল শান্তির পথ কামনা করতে শিক্ষা দিয়েছে। নামায আদায়কারী ব্যক্তিগণ প্রত্যেক দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাযে বারবার সূরা ফাতিহা তিলাওয়াত করে থাকেন। এই সূরার মাধ্যমে তাঁরা আল্লাহ তা’য়ালার কাছে দোয়া করতে থাকেন-
اهْدِنَا
الصِّرَاطَ
الْمُسْتَقِيمَ
তুমি
আমাদের সরল ও অবিচল পথটি দেখিয়ে দাও। (সূরা ফাতিহা)
যে মুসলমান প্রত্যেক দিন ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাত নামাযেই সূরা ফাতিহার মাধ্যমে ৩২ বার মহান আল্লাহর কাছে কাতর কন্ঠে আবেদন করছে, ‘আমাদেরকে সহজ-সরল পথ দেখাও।’ সেই মুসলমানের পক্ষে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী তৎপরতার পথে অগ্রসর হওয়া কি সম্ভব? প্রকৃত মুসলমানদের সাথে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের ঐ দূরত্ব রয়েছে, যে দূরত্ব পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে রয়েছে। ইসলামের নামে যারা সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে, তারা না জেনে অথবা ইসলামের দুশমনদের হাতের পুতুল হিসেবেই চালাচ্ছে। বলা বাহুল্য, ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের বদনাম করার লক্ষ্যেই শত্রুপক্ষ মুসলিম নামধারী এসব লোককে ব্যবহার করছে।
ইসলামের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের পথ অনুসরণ করে দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে, তারা স্পষ্টই ভ্রান্ত পথের অনুসারী এবং এ পথ গিয়েছে জাহান্নামে। বিপর্যয় সৃষ্টিকারী এসব লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
যে মুসলমান প্রত্যেক দিন ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নাত নামাযেই সূরা ফাতিহার মাধ্যমে ৩২ বার মহান আল্লাহর কাছে কাতর কন্ঠে আবেদন করছে, ‘আমাদেরকে সহজ-সরল পথ দেখাও।’ সেই মুসলমানের পক্ষে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী তৎপরতার পথে অগ্রসর হওয়া কি সম্ভব? প্রকৃত মুসলমানদের সাথে সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের ঐ দূরত্ব রয়েছে, যে দূরত্ব পূর্ব ও পশ্চিমের মধ্যে রয়েছে। ইসলামের নামে যারা সন্ত্রাসী ও জঙ্গীবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে, তারা না জেনে অথবা ইসলামের দুশমনদের হাতের পুতুল হিসেবেই চালাচ্ছে। বলা বাহুল্য, ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের বদনাম করার লক্ষ্যেই শত্রুপক্ষ মুসলিম নামধারী এসব লোককে ব্যবহার করছে।
ইসলামের নামে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের পথ অনুসরণ করে দেশে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে, তারা স্পষ্টই ভ্রান্ত পথের অনুসারী এবং এ পথ গিয়েছে জাহান্নামে। বিপর্যয় সৃষ্টিকারী এসব লোকদের সম্পর্কে আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لَا تُفْسِدُوا فِي الْأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُون
তাদেরকে যখনই বলা হয়েছে, ‘তোমরা
পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টি করো না’ তখনই
তারা বলেছে, ‘আমরা তো সংশোধনকারী
মাত্র।’ (সূরা বাকারা-১১)
সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদ নির্ভর পথ অনুসরণ করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষ হত্যাকারীদের যখন বলা হচ্ছে, ‘তোমরা কেনো এই বিপর্যয় সৃষ্টি করছো, তারা জবাব দিচ্ছে, ‘আমরা আল্লাহর আইন কায়েমের জন্য এই কাজ করেছি। অর্থাৎ অশান্তি সৃষ্টিকারী অন্য সকল আইন বাতিল করে আল্লাহর শান্তিময় আইন কায়েম করার লক্ষ্যেই এসব কাজ করছি।’
এসব মূর্খ-জাহিলরাই যে প্রকৃত অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী, এই চেতনাই এদের মধ্যে নেই। এসব চেতনাহীন দুষ্কৃতিকারীদের সম্পর্কেই আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদ নির্ভর পথ অনুসরণ করে বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মানুষ হত্যাকারীদের যখন বলা হচ্ছে, ‘তোমরা কেনো এই বিপর্যয় সৃষ্টি করছো, তারা জবাব দিচ্ছে, ‘আমরা আল্লাহর আইন কায়েমের জন্য এই কাজ করেছি। অর্থাৎ অশান্তি সৃষ্টিকারী অন্য সকল আইন বাতিল করে আল্লাহর শান্তিময় আইন কায়েম করার লক্ষ্যেই এসব কাজ করছি।’
এসব মূর্খ-জাহিলরাই যে প্রকৃত অশান্তি ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী, এই চেতনাই এদের মধ্যে নেই। এসব চেতনাহীন দুষ্কৃতিকারীদের সম্পর্কেই আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
أَلَا إِنَّهُمْ هُمُ الْمُفْسِدُونَ وَلَكِنْ لَا يَشْعُرُونَ
সাবধান! প্রকৃতপক্ষে এরাই বিপর্যয় সৃষ্টিকারী, কিন্তু এর কোনো
চেতনাই তাদের নেই। (সূরা বাকারা-১২)
ইসলামের দুশমন কর্তৃক বিভ্রান্ত হয়ে বোমাবাজ মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসীরা ইসলামের নামে দেশে যে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে এবং নিজেকে যে নবীর উম্মত তথা অনুসারী হিসেবে দাবি করছে, সেই নবীয়ে রহমত সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন, ‘রাসূলের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ।’ ‘নিশ্চয়ই তুমি সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।’ ‘তুমিই সবথেকে সহজ-সরল পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত।’
ইসলামের দুশমন কর্তৃক বিভ্রান্ত হয়ে বোমাবাজ মানুষ হত্যাকারী সন্ত্রাসীরা ইসলামের নামে দেশে যে বিপর্যয় সৃষ্টি করছে এবং নিজেকে যে নবীর উম্মত তথা অনুসারী হিসেবে দাবি করছে, সেই নবীয়ে রহমত সম্পর্কে স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালা বলেছেন, ‘রাসূলের জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য সর্বোত্তম আদর্শ।’ ‘নিশ্চয়ই তুমি সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।’ ‘তুমিই সবথেকে সহজ-সরল পথের ওপর প্রতিষ্ঠিত।’
বোমা হামলা- প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
সারা পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশেই সন্ত্রাসী মন-মানসিকতাসম্পন্ন নাগরিক রয়েছে এবং তারা কোনো না কোনো কারণে সুযোগ পেলেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে থাকে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয় এবং এসব সন্ত্রাসীদের শাস্তি দেয়ার দন্ডবিধিও অত্যন্ত কঠোর। কিন্তু বাংলাদেশে ‘আল্লাহর আইন চালুর’ নামে সন্ত্রাস সৃষ্টি করার বিষয়টি বর্তমানে যেভাবে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে, ইতোপূর্বে এ ধরনের শ্লোগানও শোনা যায়নি এবং আল্লাহর আইন চালুর নাম করে কেউ সন্ত্রাসও করেনি। ইসলামের কথা বলে যেসব সংগঠন সন্ত্রাস আর জঙ্গীবাদী তৎপরতা চালাচ্ছে, যেমন হরকাতুল জিহাদ, জুমরাতুল মাসাকীন, জাগ্রত মুসলিম জনতা জেএমবি, আল্লাহর দল ইত্যাদি। এসব ভুঁইফোড় সংগঠনের নামও ইতোপূর্বে শোনা যায়নি।উল্লেখিত সংগঠনসমূহের মূল নেতৃত্বে কে আছেন এবং তাদের উপদেষ্টা ও কর্মপরিষদে কারা আছেন, তাদের ইসলামী জ্ঞান কতটুকু, শিক্ষাগত যোগ্যতা কি, সামাজিক অবস্থান কার কোন্ ধরনের, জ্ঞান, বিবেক-বুদ্ধি কোন্ পর্যায়ের, তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য কি এবং দল পরিচালনায় অর্থের উৎসই বা কি, এসব ব্যাপারে জাতি সম্পূর্ণ অন্ধকারে রয়েছে।
যে ব্যক্তি কোনো মুমিনকে জেনে বুঝে হত্যা করবে, তার শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম। সেখানে সে চিরদিন থাকবে। তার ওপর আল্লাহর গযব ও অভিশাপ এবং আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তি নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। (সূরা নিসা-৯৩)
কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী একমাত্র বৈধ কারণ ব্যতীত কেউ কাউকে হত্যা করতে পারবে না এবং কেউ যদি তা করে, তাহলে অবশ্যই তাকে শাস্তি পেতে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
আরবী হবে,,,,,,,,,
তারা আল্লাহ ব্যতীত আর কোনো মাবুদকে ডাকে না, আল্লাহ যে প্রাণকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন, সংগত কারণ ব্যতীত তাকে যে হর্তা করে না এবং ব্যভিচার করে না, এসব যে-ই করে সে তার গোনাহের শাস্তি ভোগ করবে। কিয়ামতের দিন তার জন্য এ শাস্তি আরো বাড়িয়ে দেয়া হবে, সেখানে সে অপমানিত হয়ে চিরকাল থাকবে। (সূরা ফোরকান-৬৮-৬৯)
মানুষের ইতিহাসে এই মানুষই দারিদ্রতার ভয়ে এবং অন্যান্য কারণে নিজ সন্তানকেও হত্যা করতো। নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ইসলাম প্রতিষ্ঠার আন্দোলন শুরু করলেন, তখন পর্যন্তও এই অমানবিক প্রথা সে সমাজে চালু ছিলো। এই জঘন্য ও নিষ্ঠুর কাজ থেকে ইসলামই মানুষকে বিরত করেছে। আল্লাহ তা’য়ালা বলেন-
আরবী হবে,,,,,,,,,
তোমরা তোমাদের সন্তানদের কখনো দারিদ্রের ভয়ে হত্যা করো না। আমি যেমন তাদের রিয্ক দান করি তেমনি তোমাদেরও রিয্ক দান করি। তাদের হত্যা করা অবশ্যই একটি মহাপাপ। (সূরা বনী ইসরাঈল-৩১)
যারা বোমা মেরে সন্ত্রাস সৃষ্টি ও মানুষ হত্যা করে শহীদ হয়ে জান্নাতে যেতে চাওয়া যারা শিখিয়েছে, জান্নাত তো দূরে থাক, তারা জান্নাতের ঘ্রাণও পাবে না। যদিও জান্নাতের ঘ্রাণ কয়েক হাজার মাইল দূর থেকেও অনুভব করা যাবে। ভুল পথে আন্দোলন করে, গুপ্তহত্যা, সন্ত্রাস, জঙ্গীবাদ ও মানুষের মনে আতঙ্ক সৃষ্টি করার মধ্যে জান্নাত নেই। দ্বীন প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের মাধ্যমে মহান আল্লাহর গোলামী, অন্যের প্রাণ, সম্পদ, সম্মান-সম্ভ্রমের নিরাপত্তা দেয়ার মধ্যেই রয়েছে জান্নাত।
0 comments:
Post a Comment