Thursday, December 15, 2016

বহুবিবাহ, ইসলাম কি বলে?

বহুবিবাহ কি ?? এ সম্পর্কে ইসলাম কি বলে?

অমুসলিমরা এবং নাস্তিকরা ইসলামকে ছোট করার জন্য যে সব বিতর্কিত টপিক তুলে ধরেন, বহুবিবাহ তার মধ্যে অন্যতম। শুধু অমুসলিমরাই না, অনেক মুসলিমও বহুবিবাহকে সমর্থন করে না এবং এই বহুবিবাহের কারণে তারা ইসলাম ধর্ম নিয়ে লজ্জিত মনোভাব পোষণ করে। আসলে বেশীরভাগ অমুসলিম এবং মুসলিম জানে না ইসলামে এটাকে কেন বৈধতা দিয়েছে?? এবং তারা সবাই কারণ না জেনে এটা নিয়ে সমালোচনা করে। এখানে বহুবিবাহ কি এবং ইসলাম এই সম্পর্কে কি বলে তা নিয়ে আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ।

আসুন দেখে নেই বহু-বিবাহের বলতে কি বুঝায়?

‘বহু-বিবাহ’ মানে এমন একটি বিবাহ পদ্ধতি যেখানে একজনের একাধিক সঙ্গী থাকে বা বহুজনের বহু সঙ্গী থাকে। বহু-বিবাহ দুই ধরনের- একজন পুরুষ একাধিক নারীকে বিবাহ করে। আর একজন নারী বহু স্বামী বরণ। তবে বর্তমানে আরও একভাগে ভাগ করা হয়েছে। তা হল- একটা গোষ্ঠী যেখানে একাধিক স্বামী ও একাধিক স্ত্রী থাকে [১]। 

ইসলামে কি বহুবিবাহ বৈধ??

হ্যা ইসলামে বহুবিবাহ বৈধ। তবে, সেটা শুধু পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। স্ত্রী জীবিত থাকা অবস্থায় একজন পুরুষ সর্বোচ্চ চারটি বিবাহ করতে পারবেন। তবে, স্বামী জীবিত থাকা অবস্থায় বা তালাক না দিলে একজন নারী একাধিক স্বামী গ্রহণ করতে পারবেন না। এটাই ইসলামের বিধান।

আল্লাহ পবিত্র কুরআন এ সূরা নিসার ৩নং আয়াতে বলেছেন- "আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।"

এখানে বলা হয়েছে, দুই, তিন বা চারটি বিয়ে করা যাবে, তবে ন্যায় সঙ্গত আচরণ করতে না পারলে একটি বিয়ে করতে। এবং পৃথিবীর একমাত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআন যা একটা বিয়ের কথা বলেছে। এবং আমরা জানি এই ন্যায় সংগত আচরণ করা খুব কঠিন। 

কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার পূর্বে বহু-বিবাহের কোনো মাত্রা নির্ধারিত ছিল না এবং ক্ষমতাবান প্রায় প্রতিটি মানুষ এতে অভ্যস্ত ছিল। কেউ কেউ তো শ’ এর মাত্রা ছাড়ালে ক্ষান্ত হতো না। কুরআন সর্বোচ্চ চার জনের একটা মাত্রা নির্ধারণ করে দিল। ইসলাম একজন পুরুষকে দুজন, তিনজন অথবা চারজনের যে অনুমতি দিয়েছে তা কঠিন শর্তের মধ্যে আবদ্ধ যে, কেবলমাত্র তখনই তা সম্ভব যখন তাদের মধ্যে ভারসাম্যপূর্ণ সুবিচারমূলক আচরণ করতে পারবে।

আল্লাহ পবিত্র কুরআন এ সূরা নিসার ১২৯ নং আয়াতে বলেছেন- "তোমরা কখনও স্ত্রীদেরকে সমান রাখতে পারবে না, যদিও এর আকাঙ্ক্ষী হও। অতএব, সম্পূর্ণ ঝুঁকেও পড়ো না যে, একজনকে ফেলে রাখ দোদুল্যমান অবস্থায়। যদি সংশোধন কর এবং খোদাভীরু হও, তবে আল্লাহ ক্ষমাশীল, করুণাময়।"

এখানে এটাই বুঝানো হয়েছে- ন্যায়সংগত আচরণ করা খুব কঠিন। তাই যারা ন্যায় সঙ্গত আচরণ করতে পারবে না তারা যেন একটি বিয়ে করে। এটাই ইসলামের বিধান। 


এই বহুবিবাহ কি বাধ্যতামূলক?? 

না, এটা ইসলামে বাধ্যতামূলক না। ইসলামে এটা ঐচ্ছিক কাজ। একজন পুরুষ একজন নারীকে বিয়ে করেই অনেক ভাল মুসলিম হতে পারে। ইসলামে এটা বাধ্যতামূলক না। এবং আমার মতে, একাধিক বিয়ে করলে অবিচার করার সম্ভাবনা তৈরী হবে। এটা থেকে নিজেকে বাচিয়ে রাখা খুব কঠিন হবে। তবে যারা মনে করে ন্যায়সংগত আচরণ করতে পারবে তারা সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করতে পারবে।

অনেক মুসলিম এর প্রশ্নের উত্তর এখানেই শেষ হয়ে যাবে। তবে কিছু আধুনিক মুসলিম এবং বেশীরভাগ অমুসলিম জানতে চাইবেন, কেন ইসলামে এই বিধান রাখা হল?? তাদের প্রশ্নের উত্তর পাবেন এই লিঙ্ক এ। https://www.facebook.com/notes/shamsuddha-al-amin/1112463502103957 

 তথ্যসূত্রঃ


0 comments:

Post a Comment