Thursday, November 19, 2015

মুসলিম যুবককে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন প্যারিসের শত পথচারী

মুসলিম যুবককে জড়িয়ে ধরে কাঁদলেন প্যারিসের শত পথচারী

   
ইনকিলাব ডেস্ক : প্যারিসের সন্ত্রাসী হামলায় শতাধিক মানুষ নিহতের ঘটনাটি ইউরোপজুড়ে নিরীহ মুসলমানদের জন্য অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাখো মুসলিম অভিবাসী, শরণার্থীর জীবন এখন নানাভাবে হুমকির মুখে। কতজনের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়ার পথে। বহু ক্ষেত্রে অমুসলিম বন্ধু-সহকর্মীদের মাঝে মুসলিমদের নিয়ে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে সন্দেহ-অভিশ্বাস। রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় পুরুষ-মহিলাদেরকে মুসলিম পোশাকের কারণে শুনতে হচ্ছে টিপ্পনী। বহু জায়গায় হামলা-হয়রানির শিকার হচ্ছেন সম্পূর্ণ নির্দোষ মুসলমানরা। ফ্রান্সের অবস্থা তো আরো ভয়াবহ।

গত শুক্রবারের পর একাধিক মসজিদে হামলা করেছে উগ্রপন্থীরা। প্রকাশ্যে মুসলিমবিদ্বেষী কথাবার্তা-আচরণ বেড়ে গেছে। উগ্রগোষ্ঠীগুলো প্রচার করছে, সব মুসলিমই সন্ত্রাসী।সব মিলিয়ে প্রতিবেশীদের মাঝে দুর্বিষহ এক জীবন যেন শুরু হল ইউরোপের মুসলমানদের। তবে সব অমুসলিমই যে পুরো মুসলিম জাতিকে সন্ত্রাসী মনে করেন না গত মঙ্গলবার তারই প্রমাণ দিলেন প্যারিসবাসী।



 ওই দিন এক মুসলিম যুবক তার চোখে রুমাল বেঁধে দাঁড়িয়ে যান প্যারিসের রাস্তায়। তার দুই পায়ের সামনে বড় দুটি কাগজের একটিতে ফ্রেঞ্চ ভাষায় লেখা ছিল, আমি একজন মুসলিম। কিন্তু আমাকে বলা হচ্ছে আমি নাকি সন্ত্রাসী।অন্য কাগজটিতে লেখা ছিল, আমি আপনাকে বিশ্বাস করি। আপনি কি আমাকে বিশ্বাস করেন? যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে আমাকে একটু বুকে জড়িয়ে ধরুন।অল্পক্ষণের মধ্যেই পথচারীদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হয় যুবকটির ওপর। ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকেন অনেকে। বৃদ্ধ-যুবক-যুবতী, নানা বর্ণ ও ধর্মের মানুষ বুকে টেনে নিতে থাকেন মুসলিম যুবকটিকে। শত শত মানুষে ভিড় লেগে যায় রাস্তাটিতে। ইউরোপের আতংকিত মুসলমানদের প্রতীক হয়ে দাঁড়ানো যুবকটিকে একবার বুকে টেনে নিতে লম্বা লাইন ধরে অপেক্ষা করছিলেন অনেকে। ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে দেখা যায়, আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা অনেক মুখ লুকিয়ে কাঁদছিলেন। অনেকে মিষ্টি হাসিতে যুবকটিকে স্বাগত জানিয়ে মোবাইলে ছবি তুলছিলেন।কয়েক মিনিট পর চোখের ওপর থেকে রুমালটি সরিয়ে সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে থাকেন যুবক। তিনি বলতে থাকেন, সন্ত্রাসী তো সন্ত্রাসীই। তারা কোনো কারণ ছাড়াই মানুষকে হত্যা করতে পারে। কিন্তু কোনো মুসলমান কখনো এমন করতে পারে না। আমাদের ধর্মে এমন করা নিষিদ্ধ। আমি আপনাদেরকে এই বার্তাটি দেয়ার জন্য এভাবে দাঁড়িয়েছি। আমি মুসলিম। কিন্তু এটা আমাকে সন্ত্রাসী বানায় না। আমি কখনো কাউকে হত্যা করিনি। এমনকি আমি বলতে পারি, গত শুক্রবার (হামলার দিন) আমার জন্মদিন ছিল। আমি তা পালন করিনি। নিহতদের পরিবারগুলোর জন্য আমি খুব মর্মাহত ছিলাম। সূত্র: হাফিংটন পোস্ট
সূত্র - দৈনিক ইনকিলাব

0 comments:

Post a Comment