সহু সিজদা কি বা কুরআন সুন্নাহর আলোকে সাহু সিজদা
সকল প্রসংশা মহান আল্লাহ পাকের জন্য যিনি
আমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন তাঁর ইবাদাত করার জন্য । এবং তাঁর ইবাদত করতে গিয়ে কোন ভুল
করে ফেললে তা সংশোধনের সুন্দর ব্যবস্থা দিয়েছেন (যেমন সালাতে-সহু সেজদা) । সালাত এবং
সালাম প্রিয় নাবী সাঃ জন্য যিনি আমাদেরকে সাহু সিজদা কিভাবে করতে হবে তা একধিকবার ব্যবহারিকভাবে
শিক্ষা দিয়েছেন ।
ছালাতে ভুলক্রমে কোন ‘ওয়াজিব’ তরক হয়ে
গেলে শেষ বৈঠকের তাশাহ্হুদ শেষে সালাম ফিরানোর পূর্বে ‘সিজদায়ে সহো’ দিতে হয়।
রাক‘আতের গণনায় ভুল হ’লে বা সন্দেহ হ’লে বা কম বেশী হয়ে গেলে বা ১ম বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে গেলে ইত্যাদি কারণে এবং মুক্তাদীগণের মাধ্যমে ভুল সংশোধিত হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ আবশ্যক হয়। শাওকানী বলেন, ওয়াজিব তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ সুন্নাত হবে।[01] অতএব ছালাতে ক্বিরাআত ভুল হ’লে বা সের্রী ছালাতে ভুলবশত ক্বিরাআত জোরে বা তার বিপরীত হয়ে গেলে সহো সিজদার প্রয়োজন নেই।
রাক‘আতের গণনায় ভুল হ’লে বা সন্দেহ হ’লে বা কম বেশী হয়ে গেলে বা ১ম বৈঠকে না বসে দাঁড়িয়ে গেলে ইত্যাদি কারণে এবং মুক্তাদীগণের মাধ্যমে ভুল সংশোধিত হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ আবশ্যক হয়। শাওকানী বলেন, ওয়াজিব তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ ওয়াজিব হবে এবং সুন্নাত তরক হ’লে ‘সিজদায়ে সহো’ সুন্নাত হবে।[01] অতএব ছালাতে ক্বিরাআত ভুল হ’লে বা সের্রী ছালাতে ভুলবশত ক্বিরাআত জোরে বা তার বিপরীত হয়ে গেলে সহো সিজদার প্রয়োজন নেই।
নিয়ম : (১) যদি ইমাম ছালাতরত অবস্থায়
নিজের ভুল সম্পর্কে নিশ্চিত হন কিংবা সরবে ‘সুবহানাল্লাহ’ বলার মাধ্যমে লোকমা দিয়ে
মুক্তাদীগণ ভুল ধরিয়ে দেন, তবে তিনি শেষ বৈঠকের তাশাহ্হুদ শেষে তাকবীর দিয়ে পরপর দু’টি
‘সিজদায়ে সহো’ দিবেন। অতঃপর সালাম ফিরাবেন।[02]
(২) যদি রাক‘আত বেশী পড়ে সালাম ফিরিয়ে
দেন, অতঃপর ভুল ধরা পড়ে, তখন (পূর্বের ন্যায় বসে) তাকবীর দিয়ে ‘সিজদায়ে সহো’ করে সালাম
ফিরাবেন। [03]
(৩) যদি রাক‘আত কম করে সালাম ফিরিয়ে দেন।
তখন তাকবীর দিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে বাকী ছালাত আদায় করবেন ও সালাম ফিরাবেন। অতঃপর (তাকবীর
সহ) দু’টি ‘সিজদায়ে সহো’ দিয়ে পুনরায় সালাম ফিরাবেন।[04]
(৪) ছালাতের কমবেশী যাই-ই হৌক সালামের
আগে বা পরে দু’টি ‘সিজদায়ে সহো’ দিবেন।[05]
মোট কথা ‘সিজদায়ে সহো’ সালামের পূর্বে
ও পরে দু’ভাবেই জায়েয আছে। কিন্তু তাশাহহুদ শেষে কেবল ডাইনে একটি সালাম দিয়ে দু’টি
‘সিজদায়ে সহো’ করে পুনরায় তাশাহ্হুদ ও দরূদ পড়ে দু’দিকে সালাম ফিরানোর প্রচলিত প্রথার
কোন ভিত্তি নেই।[06] সিজদায়ে সহো-র পরে ‘তাশাহ্হুদ’ পড়ার বিষয়ে ইমরান বিন হুছাইন (রাঃ)
হ’তে যে হাদীছটি এসেছে, সেটি ‘যঈফ’।[06-1] তাছাড়া একই রাবী কর্তৃক বর্ণিত বুখারী ও
মুসলিমের ছহীহ হাদীছের বিরোধী। কেননা সেখানে তাশাহ্হুদের কথা নেই।[07]
ইমামের ভুল হ’লে পুরুষ মুক্তাদী সরবে
‘সুবহা-নাল্লা-হ’ বলে এবং মহিলা মুক্তাদী হাতের পিঠে হাত মেরে শব্দ করে ‘লোকমা’ দিবে
(কুরতুবী)। [08] অর্থাৎ ভুল স্মরণ করিয়ে দিবে। এখানে নারী ও পুরুষের লোকমা দানের পৃথক
পদ্ধতির কারণ হ’ল এই যে, নারীর কণ্ঠস্বরটাও লজ্জার অন্তর্ভুক্ত (لِأَنَّ صَوْتَهُنَّ عَوْرَةٌ)। যা প্রকাশ পেলে পুরুষের
মধ্যে ফিৎনার সৃষ্টি হ’তে পারে। বস্ত্তত: একারণেই নারীদের উচ্চকণ্ঠে আযান দিতে নিষেধ
করা হয়েছে।[09]
[01] . শাওকানী, আস-সায়লুল জাররা-র (বৈরূত:
দারুল কুতুবিল ইলমিয়াহ, তাবি) ১/২৭৪ পৃঃ।
[02] . মুসলিম, মিশকাত হা/১০১৫; মুত্তাফাক্ব
‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৮ ‘সহো’ অনুচ্ছেদ-২০।
[03] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৬
‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘সহো’ অনুচ্ছেদ-২০।
[04] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৭
; মুসলিম, মিশকাত হা/১০২১।
[05] . মুসলিম হা/১২৮৭ (৫৭২), ‘সহো’ অনুচ্ছেদ-১৯;
নায়লুল আওত্বার ৩/৪১১ পৃঃ।
[06] . মির‘আতুল মাফাতীহ ২/৩২-৩৩ পৃঃ
; ঐ, ৩/৪০৭, হা/১০২৪-এর আলোচনা দ্রষ্টব্য।
[06-1] . তিরমিযী, আবুদাঊদ, ইরওয়াউল গালীল
হা/৪০৩, ২/১২৮-২৯ পৃঃ।
[07] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/১০১৭
‘ছালাত’ অধ্যায়-৪, ‘সহো’ অনুচ্ছেদ-২০।
[08] . মুত্তাফাক্ব ‘আলাইহ, মিশকাত হা/৯৮৮
‘ছালাতে সিদ্ধ ও অসিদ্ধ কর্ম সমূহ’ অনুচ্ছেদ-১৯; মির‘আত ৩/৩৫৭।
[09] . মির‘আত ৩/৩৫৭-৫৮; اَلْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ তিরমিযী, মিশকাত হা/৩১০৯
‘বিবাহ’ অধ্যায়-১৩; فَلاَ تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ… আহযাব ৩৩/৩২।
বি.দ্র. আপনি এই সাইট থেকে বুখারী ভিত্তিক আলোচনা দেখুন।
সূত্র -
0 comments:
Post a Comment